রাসুল (সা:) এর ধৈর্য ও সহনশীলতার ২ টি অসাধারণ উদাহরণ
The Best 2 Patience of Prophet Muhammad (S) in Bangla
রাসুল (সা:) এর ধৈর্য ও সহনশীলতার ২ টি অসাধারণ উদাহরণ
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্র কেমন ছিল, এই প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত ও প্রসিদ্ধ একটি উত্তর হলো, তিনি সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। কিন্তু, সেই সর্বোত্তম চরিত্র বলতে কী বুঝায়, কোন ধরণের চরিত্রে চরিত্রবান হলে একজন সর্বোচ্চ আখলাকের অধিকারী হবেন – এর কোনো ব্যাখ্যা যদি হাদিস ও ইতিহাস গ্রন্থগুলোতে না থাকতো, আমরা হয়তো তখন বাধ্য হয়ে নিজেদের আখলাকের সাথে মিলিয়ে ভালো আখলাকের একটি রূপ দাঁড় করাতাম।
কিন্তু, রাসুলের প্রিয় সাহাবীগণ আমাদেরকে এর থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। তাঁর আখলাকের পরিপূর্ণ বিবরণ, খুঁটিনাটিসহ উম্মতের মাঝে তুলে দিয়েছেন। যেগুলো পড়লে মনে হয়, আমরা যা দাঁড় করাতাম, সেটার সাথে তাঁর প্রকৃত আখলাকের শুধু যে অমিল হতো তাই নয়, এত বিশাল পার্থক্য হতো যার পরিমাণ অনুধাবন করাও হয়তো সম্ভব হতো না।
সেদিন সকালে বসে বসে “সবরুর রাসুল ওয়া হিলমুহু” (রাসুলের ধৈর্য এবং সহনশীলতা) সম্পর্কে যে সমস্ত ঘটনা নির্ভরযোগ্য গ্রন্থগুলোতে আছে তা খুঁজে খুঁজে পড়ছিলাম। একেকটি ঘটনা পড়তে গিয়ে আমার মতো এরকম পাষাণ হৃদয়ের মানুষের চোখেও বারবার পানি চলে আসছিল যে, একটা মানুষ এতটা ধৈর্যশীল কিভাবে হতে পারেন! নিজ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে তিনি কখনও প্রতিশোধ নেননি, এর প্রমাণে যে বিবরণগুলো হাদিস গ্রন্থে রয়েছে যে কারো পশম দাঁড়িয়ে যাবে, এও কি সম্ভব?
#1 রাসুল (ﷺ)-এর ধৈর্য ও সহনশীলতা
সহিহ বুখারিতে আনাস রা এর একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। যেই বর্ণনার মোটামুটি ভাবার্থ এরকম যে, তিনি একবার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মক্কার একটি রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গায়ে নাজরানের তৈরি একটি মোটা চাদর জড়ানো ছিল। হঠাৎ একজন আ’রাবি (গ্রাম্য লোক) রাসুলকে দেখতে পেল। সে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একদম কাছে এসে পেছনে থেকে প্রচণ্ড জোরে তাঁর চাদর ধরে টান দিয়ে বসলো। আনাস রা বলেন, এত জোরে টান দিয়েছিল, রাসুলের ঘাড়ে বড় একটি চাদর ঘষার দাগ পড়ে গেল।
এরপর সেই গ্রাম্য লোকটি বললো- মুহাম্মদ! তোমার সঙ্গী সাথীদের আদেশ দাও, তোমার কাছে আল্লাহর যে মাল- সম্পদ আছে, সেখান থেকে যেন আমাকে দেয়া হয়।
একটুও রাগ হলেন না আমাদের রাসুল। ভ্রু পর্যন্ত কুঞ্চিত হলো না। মুচকি হেসে সাহাবীদের কিছু দেওয়ার আদেশ দিয়ে দিলেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
#2 রাসুল (ﷺ)-এর ধৈর্য ও সহনশীলতা
সহিহ বুখারির আরেক বর্ণনায়, ইবনে মাসউদ (রা) বলেন, আমি যেন রাসুলকে দেখতে পাচ্ছি। তিনি তাঁর পূর্ববর্তী একজন নবীর কাহিনী বলছিলেন। যে নবীকে তাঁর কওমের লোকেরা আঘাতের পর আঘাত করে রক্তাক্ত করে ফেলেছিল। কিন্তু তিনি নিজের চেহারা থেকে রক্ত মুছছিলেন আর আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলেন – আল্লাহ! আমার কওমকে মাফ করে দিন। ওরা তো বুঝে না।
ইমাম নববি (র) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম যদিও এটা কোনো একজন নবীর কাহিনী হিসেবে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু উহুদের যুদ্ধের পর স্বয়ং তাঁর আচরণ এবং তাঁর কওমের জন্য দোয়া হুবুহু এরকমই ছিল।
এরকম হাজার দৃষ্টান্তে ভরপুর হাদিস ও ইতিহাস গ্রন্থগুলো। যে নবীর উম্মত বলে দাবী করি, তাঁর এই আখলাকের ছিটেফোঁটাও কি আমাদের মধ্যে আছে?
আল্লাহ! আমাদের বুঝ দিন। আমরা যে গাফেল, এটা বোঝার মতো সতর্ক আমাদের বানিয়ে দিন।
সূত্র: এই পোস্টটি আমার স্পন্দন ব্লগ থেকে কপি করা হয়েছে এবং আমি কিছুটা এডিট করেছি।
Comments
Post a Comment